মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩০ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১
যে কারণে ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘রোয়ানু’

যে কারণে ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘রোয়ানু’

ruwanuআমার সুরমা ডটকম ডেক্সপশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু। এখন সাগরে শক্তি সঞ্চয় করছে ঘূর্ণিঝড়টি। চট্টগ্রামে ৭, কক্সবাজারে ৬, খুলনা ও মংলা সমুদ্রবন্দরে ৫ নম্বর বিপদ সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু এর নামকরণ রোয়ানু কেন? এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের আট দেশের আবহাওয়া দপ্তর ও বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেলের তালিকা অনুযায়ী এ ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয়েছে ‘রোয়ানু’। মালদ্বীপ এ নামটি প্রস্তাব করেছিল। রোয়ানু শব্দটিও মালদ্বীপের। এর অর্থ নারিকেলের ছোবড়ার তৈরি দড়ি।
তবে ঘূর্ণিঝড়ের এই নামকরণ বিষয়টি নতুন নয়। প্রথম যে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়েছিল, সেটা ছিল প্রায় তিনশ’ বছর আগে শ্রীলংকার মহাপরাক্রমশালী রাজা মহাসেনের নামে। আর এ ঝড়গুলির নাম প্রবর্তন করে থাকে জাতিসংঘের এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের আবহাওয়া সংস্থা ‘এস্কেপ’।
সময়ের আবর্তে ঋতু পরিবর্তনের কারণে পৃথিবীতে নানা রকম ঝড় সংঘটিত হয়। তার আবার বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। এর কোনটির উৎপত্তিস্থল সমুদ্র। আবার কোনটির স্থলভাগ। আমাদের দেশের স্থল ভাগের ঝড়, কালবৈশাখী, টর্নেডো, ইত্যাদি। সাধারণত অবস্থান এবং ঋতুর বৈচিত্র ও বৈশিষ্ট্যের কারণে কতগুলো এলাকায় মাঝে মধ্যে ঘূর্ণিঝড় হয়ে থাকে।
ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয়ার কারণও বেশ সহজ। এগুলোর এমন নাম দেয়া হয় যেন বিজ্ঞানী থেকে সাধারণ মানুষ সহজে মনে রাখতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের আবহাওয়া অফিসগুলো এই নামকরণের দায়িত্ব পালন করে থাকে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই দায়িত্ব পায় ভারতীয় আবহাওয়া সংস্থা। বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং থাইল্যান্ড থেকে আরব সাগর এবং বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়।
যখনই কোনো ঘূর্ণিঝড় হয়, এই দেশগুলো থেকে নাম প্রস্তাব করা হয়। এর আগেও  ফলিন, হুদহুদ, নার্গিস, সিডর, আইলা, মহাসেন, নিলুফার নামেও নামকরণ করা হয়। ভারতের ছিলো অগ্নি, আকাশ, বিজলী, জাল লেহার, মেঘ। অনিল, অগ্নি, নিশা, গিরি এগুলো ছিলো বাংলাদেশের দেয়া নাম।
আগে ঘূর্ণিঝড়কে ঘিরে নামকরণ করা হতো ঝড়ের উৎপন্ন অবস্থানকে নিয়ে। তা আবার অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ ভিত্তিক। এ প্রেক্ষাপটে যদি বলি ৪ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮০ ডিগ্রি দ্রাঘিমাংশের ঝড়টি এখন চট্টগ্রাম থেকে এক হাজার মাইল দূরে অবস্থান করছে, তাহলে মনে রাখা সম্ভব নয়। কিন্তু যদি বলা হয় ‘সিডর’ চট্টগ্রাম থেকে এক হাজার মাইল দূরে অবস্থান করছে, তাহলে শিক্ষিত ও অশিক্ষিত সবাই অনায়াসে বুঝতে পারবেন।
এই নামকরণের কাজ করেন বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার আঞ্চলিক কমিটি। তাই এই অঞ্চলের ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষেত্রে নামকরণের দায়িত্ব পড়েছে ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগের। সাধারণত ঘূর্ণিঝড়ের আগেই নামকরণের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। পরবর্তী ঘুর্ণিঝড়ের নাম হবে ফাইলিন।
২০০৭ সালে বাংলাদেশে যে ঝড়টি আঘাত হানে, তার নাম ছিল সিডর অর্থাৎ চোখ। আর এই নামটি দিয়েছিল শ্রীলংকা। এদিকে ২০০৮ সালে নার্গিস নামে যে ঘূর্ণিঝড়টি মিয়ানমার উপকূলে আঘাত হানে, সে নামটি দিয়েছে ভারত। এই নামের ব্যাপারে যতদূর জানা যায়, এটি নাকি নামকরণ করা হয়েছে বিখ্যাত প্রয়াত ভারতীয় নায়িকা নার্গিসকে উপলক্ষ করে। এদিকে তিন বছর আগে অর্থাৎ ২০০৯ সালে ভয়ঙ্কর যে ঘূর্ণিঝড়টি প্রলয়তা-ব ঘটায়, সেটা হলো আইলা (এর অর্থ হলো ডলফিন বা শুশুক)। আর আইলা নামকরণের কাজটি করেছেন, মালদ্বীপের আবহাওয়াবিদরা। আর এবার বাংলাদেশ শঙ্কিত রোয়ানু নিয়ে। যার অর্থ নারিকেলের ছোবড়া দিয়ে তৈরি দড়ি। তবে রোয়ানু নামের ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশে আঘাত হানবে কিনা সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি আবহাওয়াবিদরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com